Type Here to Get Search Results !

গারো পাহাড়ের নীচে অধ্যায় সাজেশন ২০২৩ | আমার বাংলা (সুভাষ মুখোপাধ্যায়)

দ্বাদশ শ্রেণী বাংলা গারো পাহাড়ের নীচে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর ২০২৩

প্রিয় ছাত্র ছাত্রী আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণী বাংলা সহায়ক পাঠের আমার বাংলা (সুভাষ মুখোপাধ্যায় ) থেকে গারো পাহাড়ের নীচে গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন বা প্রশ্ন উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি । তো চলুন বেশি দেরি না করে আমরা সাজেশন দেখেনি ............ ! 

প্রশ্ন : যেন রাবণের চিতা—জ্বলছে তো জ্বলছেই। রাবণের চিতার মতো আগুন কারা, কোথায়, কী উদ্দেশ্যে জ্বালিয়েছে? এই আগুন আসরে কীভাবে সাহায্য করে থাকে?

• উত্তর : লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় 'গারো পাহাড়ের নীচে রচনায় জানিয়েছেন যে, প্রতিবছর চৈত্র মাসের রাত্রিবেলায় ময়মনসিংহের উত্তরদিকের আকাশে একরাশ ধোঁয়াটে মেঘ দেখা যায়। আসলে ওটা মেঘ নয়, ওটা হল অবিভক্ত বঙ্গদেশের গারো পাহাড় (বর্তমানে মেঘালয় রাজ্যের অন্তর্গত)। ওখানে বাস করে বিভিন্ন আদিবাসী। তাদের চাষের জন্য লাঙল, হাল বা বলদ কিছুই নেই | তা ছাড়া পাহাড়ের ওপর থাকে শুধু গাছ আর পাথর, মাটি থাকে না। অথচ ফসল না ফলালে সারাবছর তারা খাবার পাবে না। তাই ফসল ফলানোর উদ্দেশ্যে পাহাড়বাসীরা প্রতিবছর চৈত্রমাসে পাহাড়ের শুকনো ঝোপঝাড়ে একদিন আগুন ধরিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে জ্বলতে থাকা সেই দাবানলকেই লেখক 'রাবণের চিতা বলে উল্লেখ করেছেন।

দাবানল জ্বলার সময় বনের বাঘ, হরিণ, পুয়োর, অজগর প্রভৃতি জন্তু আত্মরক্ষার তাগিদে ছুটোছুটি করতে থাকে। তখন পাহাড়িরা তাদের, বিশেষত শুয়োর ও হরিণগুলোকে শিকার করে মহানন্দে। আগুন জ্বলতে জ্বলতে কয়েকদিনের মধ্যে গোটা জঙ্গল সাফ হয়ে গেলে পাহাড়ের গা এবং উপত্যকায় কালো ছাইয়ের একটি পুরু আস্তরণ পড়ে যায়। সেই ছাইয়ের মধ্যেই ফসলের বীজ ছড়ায় পাহাড়িরা | কয়েকদিনের মধ্যেই গারো পাহাড়ের পোড়া জমি তামাক, ধান এবং অন্যান্য ফসলে ভরে ওঠে। এই ভাবেই সেই আগুন তাদের দু-দিক থেকে সাহায্য করে থাকে।


প্রশ্ন : পাহাড়ি গারোরা তাই তারিফ করে তাদের নাম দিয়েছে। হাজং।”—'হাজং' কথার অর্থ কী? হাজংদের জীবনযাত্রার পরিচয় দাও। 


 উত্তর : সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘গারো পাহাড়ের নীচে রচনা থেকে সংগৃহীত উদ্ধৃতিটির অন্তর্গত হাজং' কথাটি প্রকৃতপক্ষে 'গারো' ভাষার একটি শব্দ যার অর্থ পোকা।

উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের এক উপজাতি হল হাজং। গারো পাহাড়ের পাদদেশে হাজং, গারো, কোচ, বানাই, ডালু, মাগান প্রভৃতি উপজাতির মানুষ বাস করে। প্রত্যেক উপজাতির মানুষের চোখেমুখেই পাহাড়ি ছাপ লক্ষ করা যায়। হাজং-সহ এই সমস্ত উপজাতির আলাদা আলাদা মাতৃভাষা থাকলেও তারা অদ্ভুত ধরনের উচ্চারণে বাংলা ভাষাতেই কথা বলে। 'ভূ-কে 'ই', 'টু'-কে 'ত', 'ড'-কে 'দ' এবং 'দ'-কে 'ড' উচ্চারণ করে তারা। যে-কোনো বাঙালিরই হাজংদের এমন উচ্চারণ শুনলে হাসি পাবে। একজন বয়স্ক মানুষ 'দুধ'-কে 'ডুড' এবং 'তামাক'-কে 'চাষাক' বলছে শুনলে কার না হাসি পায়?

গারো পাহাড়ের ঠিক নীচে থাকা সুসং পরগনা, যার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে সোমেশ্বরী নদী। এখানে প্রথম বসতি গড়ে তোলে হাজংরাই। এ অঞ্চলের সংখ্যাগুরু আদিবাসী তারাই, গারোরা নয়। গারো পাহাড়তলির সুসং পরগনায় এসে হাজংরা প্রথম চাষবাস শুরু করে। কৃষিকার্যে তারা ছিল অত্যন্ত দক্ষ। একারণে গারো পাহাড়তলির পাহাড়ি উপজাতি গারোরা তাদের কৃষিকাজে দক্ষতাকে তারিফ করে তাদের নাম দিয়েছিল। হাজং অর্থাৎ "চাষের পোকা।


প্রশ্ন : কিন্তু হাতি-বেগার আর চলল না।” হাতি-বেগার আইন কী? তা আর চলল না কেন ? 

• উত্তর : সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আমার বাংলা গ্রন্থের 'গারো পাহাড়ের নীচে' রচনায় আমরা হাতি-বেগার আইনের বিবরণ পাই । উনিশ শতকের শেষদিকে গারো পাহাড়ে এই জমিদারি আইন চালু ছিল। পাহাড়ের ওপর মাচা বেধে সময় জমিদার সেখানে সেপাইসান্তি সহ বসে থাকতেন হাতি শিকারের উদ্দেশ্যে। গ্রামের ছেলে-বুড়ো-সহ প্রতিটি পুরুষপ্রজাকে নিজেদের খাবারদাবার সঙ্গে নিয়ে সেখানে আসতে হত হাতি-বেড় দেওয়ার জন্য। যে জঙ্গলে হাতি আছে, সেই জঙ্গলটা তাদের সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ঘিরে ফেলতে হত। জমিদারের যাতে এতটুকু অসুবিধা না হয় তার ঢালাও ব্যবস্থা থাকত। কিন্তু প্রজারা এর জন্য কিছুই পেত না | এমনকি এইভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে সাপের বা বাঘের কামড়ে তাদের অনেকেরই মৃত্যু হত।


* জমিদারের হাতি শিকারের শখ মেটানোর উদ্দেশ্যে তৈরি এই আইন পারোপাহাড়িরা বেশিদিন সহ্য করেনি। তারা গোরাচাঁদ মাস্টারের নেতৃত্বে এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। গারো পাহাড়সংলগ্ন প্রতিটি চাকলায় তাই ক্রমে ক্রমে মিটিং শুরু হয় | প্রতিটি কামারশালায় তৈরি হতে থাকে অস্ত্রশস্ত্র। কিন্তু এতসব প্রস্তুতি সত্ত্বেও জমিদারের সৈন্যদলের কাছে বিদ্রোহী প্রজারা পরাজিত হয়।

বিদ্রোহ দমনে সফল হলেও হাতি-বেগার আইন চালু রাখতে কিন্তু জমিদারেরা আর সাহস পেলেন না। গারো পাহাড়ে হাতি-বেগার প্রথা এভাবেই লুপ্ত হয়।


প্রশ্ন : তাই প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠল।”— প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল কেন? কে তাদের বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? 

উত্তর : সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর আমার বাংলা গ্রন্থের গারো পাহাড়ের নীচে' রচনায় গারো পাহাড়ের মানুষদের উপরে জমিদারি শোষণের বর্ণনা দিয়েছেন। দৈনন্দিন শোষণের সঙ্গেই সেখানে ছিল কিছু নির্মম জমিদারি আইন। 'হাতিবেগার' ছিল এরকমই একটি আইন। জমিদারের হাতি ধরার শখ পূরণ করার জন্য পাহাড়ে মাচা বাঁধা হত। মাচার উপরে সিপাই-সান্ত্রি নিয়ে বসতেন জমিদার। আর প্রত্যেক গ্রাম থেকে চাল, চিঁড়ে ইত্যাদি বেঁধে নিয়ে পুরুষপ্রজাদের আসতে হত। যে জঙ্গলে হাতি আছে তা বেষ্টন করে তাদের দাঁড়াতে হত। ছেলে-বুড়ো কাউকেই রেহাই দেওয়া হত না। যারা হাতি বেড় দিতে যেত তাদের কাউকে সাপে কামড়াত, কেউ-বা বাঘের মুখে প্রাণ দিত। এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। চাকলায় চাকলায় মিটিং শুরু হয়, কামারশালায় তৈরি হয় মারাত্মক সব অস্ত্র। শেষপর্যন্ত জমিদারের বাহিনীর কাছে তাদের পরাজয় ঘটলেও হাতিবেগার আইন কখ রা হয়ে যায়।



প্রশ্ন : গারো পাহাড়ের নীচে' রচনা অবলম্বনে সুসং পরগনার নিসর্গ-প্রকৃতি এবং মানবপ্রকৃতির বর্ণনা দাও।


● উত্তর : সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘গারো পাহাড়ের নীচে' শীর্ষক রচনায় গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত সুসং পরগনার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন।


রেললাইন থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত এই সুসং পরগনার রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো নয়। শস্যশ্যামলা এই উপত্যকার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরী। এতে শীতকালে জল খুব কম থাকে। কিন্তু এই নদীর ঠান্ডা জলে এমন স্রোত থাকে যে, তাতে পা ডোবালে মনে হয় কুমিরে দাঁত বসিয়ে যেন পা টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তাই ফেরিনৌকোতেই মানুষজনকে পারাপার করতে হয়।

সুসং পরগনায় হাজং, গারো, কোচ, বানাই, ডালু, মাগান প্রভৃতি নানা উপজাতির মানুষের বাস। গারো পাহাড়তলিতে হাজংরাই সংখ্যায় বেশি। চাষাবাদে দক্ষ এই উপজাতিই এ অঞ্চলে প্রথম পা রেখেছিল। এ অঞ্চলের গারোদের বাসস্থানের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। গাছের উপর মাচা বেঁধে বাসস্থান তৈরি করে সেখানেই শোওয়া-বসা, রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া করে তারা। পোষা হাঁস-মুরগিকেও তারা বন্যজন্তুর থেকে বাঁচাতে মাচাঘরেই রাখে। এখানকার প্রতিটি উপজাতির চোখে-মুখে পাহাড়ি ছাপ থাকলেও তাদের ভাষা কিন্তু আলাদা । অবশ্য বাংলা ভাষার প্রভাবে গারো ভাষা ছাড়া অন্য ভাষাগুলির অস্তিত্ব আর বিশেষ নেই। এইসব উপজাতির মানুষের উচ্চারণে বাংলা শব্দ অনেকটাই বদলে যায়। তারা ‘ত’-কে ট’, ‘ট’-কে ‘ত’, 'ড'-কে 'দ' এবং ‘দ’-কে ‘ড' বলে। তাই তারা ‘দুধ’-কে ‘ডুড' এবং ‘তামাক’- কে ‘টামাক' বলে থাকে।


প্রশ্ন : গারো পাহাড়ের নীচে' যারা বাস করে তাদের জীবনযাত্রার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

• উত্তর : সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আমার বাংলা গ্রন্থের ‘গারো পাহাড়ের নীচে’ রচনায় সেখানকার মানুষদের জীবনযাত্রার এক স্পষ্ট ও নিখুঁত বর্ণনা পাওয়া যায়।

গারো পাহাড়ের নীচের সুসং পরগনায় বাস করে হাজং-গারো-কোচ বানাই- ডালু-মার্গান প্রভৃতি নানা সম্প্রদায়ের মানুষ। এখানকার প্রথম বাসিন্দা হাজংরা ছিল চাষবাসে খুব দক্ষ। তাই গারোরা এদের নাম দিয়েছিল হাজং – অর্থাৎ, চাষের পোকা। গারোদের ঘরগুলো মাচা করে বাঁধা, তার ওপরেই খাওয়া- শোওয়া রান্নাবান্না-হাঁসমুরগির থাকার ব্যবস্থা।

চাষের সময় গারো পাহাড়ের নীচে দিগন্তজোড়া ধানের খেতে নারীপুরুষ কাস্তে হাতে ধান কাটতে ছোটে। ছোটো ছেলেরা পিঠে ধানের আঁটি বেঁধে এনে খামারে ভরে। কিন্তু এখানকার মানুষদের জীবনে দুষ্টু শনির মতোই লুকিয়ে থাকে জমিদারের কুনজর। পরিশ্রম করে ফলানো ফসলের সামান্য অংশই তারা ভোগ করতে পারে, বেশিরভাগটাই নিয়ে চলে যায় জমিদারের পাইক-বরকন্দা

আগে হাতি-বেগার আইনের কারণে জমিদারের হাতি শিকারের সময় জঙ্গল ঘিরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হত গ্রামের মানুষদের। প্রজাবিদ্রোহের ফলে সে আইন বাতিল হলেও দুর্দশা কাটেনি তাদের। অনেক বছর আগে একসময় এখানকার মানুষগুলোর খেয়েপরে বেঁচে থাকতে কোনো অসুবিধাই হত না। কিন্তু দিনের পর দিন জমিদারের অত্যাচারে ও শোষণে আজ তাদের দুমুঠো ভাত কিংবা একফোঁটা দুধও জোগাড় করতে হয় চেয়েচিন্তে।

অবিভক্ত বাংলা দেশে থাকলেও বাঙালি জীবনযাত্রার সাথে এরা কখনও নিজেদের মেলাতে পারেনি, আর বাঙালিরাও তাদের আপন করে নিতে পারিনি।


প্রশ্ন : অথচ আমরা সবাই বাংলাদেশেরই মানুষ।”— অথচ বলার কারণ কী? মন্তব্যটির মধ্যে লেখকের কোন্ জীবনদৃষ্টি ধরা পড়েছে, আলোচনা করো।

উত্তর : সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর আমার বাংলা প্রস্থের অন্তর্গত 'গারো পাহাড়ের  নীচে রচনায় গারো পাহাড় ও পাহাড়তলির পাহাড়ি এবং সমতলি আদিবাসীদের জীবনযাত্রার বর্ণনা করেছেন। রচনার শেষে লেখক জানিয়েছেন যে, গারো পাহাড় এবং পাহাড়তলিতে গেলে সেখানকার আদিবাসিরী আমাদের 'বাঙাল' অর্থাৎ বাঙালি বলে অভিহিত করে। আমরা বাঙালিরা এই আদিবাসীদের কখনোই আপন করে নেইনি বলেই এরা আমাদের পর ভাবে। এ প্রসঙ্গেই লেখক 'অথচ' অব্যয়ের ব্যবহার করে জানিয়েছেন যে, এইসব আদিবাসীরা অবিভক্ত বঙ্গদেশেরই আদিবাসী। , আমার বাংলা গ্রন্থের অন্তর্গত 'গারো পাহাড়ের নীচে' ভ্রমণকাহিনিটি রচনাকালে গারো পাহাড় এবং তার সংলগ্ন সমস্ত অঞ্চল অবিভক্ত বঙ্গদেশের অন্তর্গত ছিল। বর্তমান অবশ্য ওই অঞ্চলটি মেঘালয় রাজ্যের অন্তর্গত। সে যাইহোক, বাঙালিরা কিন্তু অবিভক্ত বঙ্গদেশের আদিম অধিবাসী নয়। তাই বঙ্গদেশের আদিম অধিবাসী হিসেবে বিভিন্ন পাহাড়ি এবং সমতলি আদিবাসীদের এ স্থানটির প্রতি অধিকার বেশি | অথচ আমরা বাঙালিরা সভ্য জাতি হয়েও তাদের আপন করে নিতে পারিনি, ভূমিপুত্রদের তাদের অধিকার থেকে, বঞ্চিত করেছি। মরমি লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় বাঙালি হিসেবে তাই অপরাধবোধে ভোগেন। প্রতিটি জাতি-উপজাতি স্বভূমে এবং অন্যত্র তাদের জাতিসত্তা এবং স্বকীয় শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে এগিয়ে যাবে— এমনটাই চান লেখক। তা ছাড়া, আদিবাসীদের প্রতি সভ্য জাতির শোষণ এবং উচ্চমন্যতাকেও তিনি কখনোই সমর্থন করেন না। লেখকের এই মানবিক জীবনদৃষ্টিই প্রতিফলিত হয়েছে মন্তব্যটির মধ্য দিয়ে |

Tags

Post a Comment

0 Comments