Type Here to Get Search Results !

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর | পরিবেশ তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ 2023



পরিবেশ তা সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ  অধ্যায় | অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন 2022


1. মানুষের ক্রিয়াকলাপে N2-চক্রের পরিবর্তনে কী কী সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে?

উত্তর: অ্যাসিড বৃষ্টি, গ্রিনহাউস প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

2. বিভিন্ন অঞ্চলের মাটি, নদী ও হ্রদের অম্লীকরণের কারণ কী?

উত্তর: অ্যাসিড বৃষ্টি ও অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, মাটি, নদী ও হ্রদের অম্লীকরণের মূল কারণ।

3. একটি অ্যামোনিফাইং ব্যাকটেরিয়ার নাম লেখো ।

উত্তর: ব্যাসিলাস মাইকয়ডেস।

4. শিল্পজাত নাইট্রোজেন সংবন্ধন কীভাবে হয়? 

উত্তর: সার কারখানাতে, অ্যামোনিয়া উৎপাদনের সময়ে শিল্পজাত N2 সংবন্ধন হয়।

5. যে পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়া থেকে নাইট্রেট তৈরি হয়, তাকে কী বলে?

উত্তর: নাইট্রিফিকেশন।

6. দুটি নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার নাম লেখো ৷ 

উত্তর: নাইট্রোব্যাকটর, নাইট্রোসোমোনাস।

7. মাটির উর্বরতা হ্রাস করে এমন একটি ব্যাকটেরিয়ার নাম লেখো 

উত্তর : সিউডোমোনাস ডিনাইট্রিফিকেন্স।

8. যে পদ্ধতিতে নাইট্রেট থেকে নাইট্রোজেন যুক্ত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মেশে তাকে কী বলে?

উত্তর: ডি-নাইট্রিফিকেশন।

9. কোন ধরনের ফসল চাষে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়?

উত্তর: শিম্বিগোত্রীয় উদ্ভিদ (মটর, ছোলা, সিম, বিন)।

10. জলবাহিত কৃমিঘটিত দুটি রোগের লেখো।

উত্তর: টিনিয়েসিস অ্যাসকেরিয়াসিস (গোলকৃমিঘটিত)।

11. জলদূষণের সঙ্গে যুক্ত দুটি ভারী ধানুষটিত রোগের নাম লেখো। 

উত্তর: ডিসলেক্সিয়া (সীসা দূষণের ফল), ব্ল্যাকফুট ডিজিজ (আর্সেনিক দূষণের ফল)। 

12. ভারতে গ্রহণযোগ্য শব্দের প্রাবল্য কত ? 

উত্তর: 65 db । (ডেসিবেল হল বেলের 10 ভাগের একভাগ)।

13. শব্দের প্রাবল্য কত হলে কানের ক্ষতি হয়?

উত্তর: শব্দের প্রাবল্য 100 db-এর বেশি হলে শ্রুতিযন্ত্র এবং 160 db-এর বেশি হলে কানের পর্দা ফেটে সম্পূর্ণ বধিরতা হয়। [একে NIHL (Noise Induced Hearing Loss) বলে।

14. শব্দদূষণ রোধের জন্য কী ব্যবহার করা হয়? 

উত্তর: ইয়ার প্লাগ ও ইয়ার মাফলার।

15. মাটি দূষণের প্রধান কারণ কী? 

উত্তর: অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রয়োগ হল মাটি দূষণের প্রধান কারণ।

16. শব্দদূষণের কয়েকটি কারণ লেখো। 

উত্তর: উড়োজাহাজের কলকারখানার সাইরেন, মিউজিক সিস্টেম, মাইক, যানবাহনের হর্ন।

17. ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ কী? 

উত্তর: উচ্চ জন্মহার ও কম মৃত্যুহার।

18. অ্যাজমার একটি লক্ষণ লেখো ।

উত্তর: কষ্টদায়ক শ্বাসপ্রশ্বাস।

19. কোন্ পেশার মানুষেরা ব্রঙ্কাইটিসে বেশি আক্রান্ত হন?

উত্তর: ঝালাইকর্মী, দমকলকর্মী। 

20. IUCN এর বর্তমান নাম কি ?

উত্তর : WCU (WORLD CONVERSION UNION)

21. WWF এর পুরো নাম কি?

উত্তর : WORLD WILDLIFE FUND FOR NATURE

 22. ভারতের মোট অভয়ারণ্যের সংখ্যা কত ?

উত্তর : 515 টি


পরিবেশ তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ অধ্যায়|সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় |জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন 2022


1. পরিবেশে মৌলিক উপাদানের ঘাটতি হয় না কেন ?

উত্তর: পরিবেশের মৌলিক উপাদানগুলি বিভিন্ন জৈবিক পদ্ধতিতে আত্তীকরণের মাধ্যমে জীবদেহে আবদ্ধ হয়। জীবদেহের রেচন ও মৃত্যুর পর পচনের পরে তা আবার পরিবেশে ফিরে আসে। পরিবেশ ও জীবদেহের মধ্যে এই চক্রাকার আবর্তনের ফলে পরিবেশে মৌলিক উপাদানগুলির ঘাটতি হয় না ৷

2. অ্যামোনিফিকেশন কাকে বলে ?

উত্তর: যে পদ্ধতিতে মৃত জীবদেহের প্রোটিন আর্দ্রবিশ্লেষিত হয়ে অ্যামোনিয়াতে পরিণত হয়, তাকে অ্যামোনিফিকেশন বলে।

3. ডি-নাইট্রিফিকেশন কাকে বলে ?

উত্তর: যে পদ্ধতিতে নাইট্রেট (NO3) ডি নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিজারিত হয়ে নাইট্রোজেন গঠন করে ও নাইট্রোজেনের মুক্তি ঘটায়, তাকে ডি-নাইট্রিফিকেশন বলে। 

4. N2-চক্রের ধাপগুলি কী কী?

উত্তর: N2-চক্রের ধাপগুলি হল—[1] নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ বা আবদ্ধকরণ—[i] প্রাকৃতিক, [ii] জীবজ, [iii] শিল্পজাত, [2] মাটির নাইট্রোজেনের জীবদেহে প্রবেশ, [3] জীবদেহ থেকে নাইট্রোজেনের মাটিতে পুনঃপ্রবেশ— [i] অ্যামোনিফিকেশন, [ii] নাইট্রিফিকেশন, [4] নাইট্রোজেন মুক্তি বা ডিনাইট্রিফিকেশন।

5. জৈব-অভঙ্গুর দূষক কাকে বলে ?

উত্তর: যেসব জটিল দূষণকারী পদার্থগুলি সরল পদার্থে রূপান্তরিত না হয়ে পরিবেশে হতে থাকে, তাদের জৈব-অভঙ্গুর দূষক ব যেমন—গৃহের আবর্জনা, গবাদিপশুর মল ইত্যাদি

6.  জৈবভঙ্গুর দূষক কাকে বলে?

উত্তর : যেসব জটিল দূষণকারী পদার্থ গুলি মুজিব দ্বারা বিভাজিত হয়ে সরল পদার্থের পরিণত হয়। তাদের জৈব ভঙ্গুর দূষক বলে ।

7. প্রাথমিক দূষক কী ?

উত্তর: যে দূষক উৎস থেকে সরাসরি পরিবে মিশে যায়, তাকে প্রাথমিক দূষক বলে। যেমন SO2, CO2, SPM, ছাই।

8. গৌণ দূষক কী ?

উত্তর: যে দূষক প্রাথমিক দূষক থেকে মনুষ্য ক্রি বা পরিবেশের প্রভাবে তৈরি হয় এবং তারপ পরিবেশে মিশে মানুষের ক্ষতিসাধন করে, তাে গৌণ দূষক বলে। যেমন— ধোঁয়াশা, H2SO4, PAN ইত্যাদি।

9. গ্রিনহাউস গ্যাস কাকে বলে ?

উত্তর: যে সকল গ্যাস পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের তাপতরঙ্গকে শোষণ করে প্রতিফলিত করে মহাশূন্যে ফিরে যেতে না দিয়ে ভূ-পৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে, তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস বলে।

10. গ্রিনহাউস প্রভাব কি?

উত্তর : গিরিন হাউস গ্যাস পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিকৃত তাপ তরঙ্গকে শোষণ করে বা প্রতিফলিত করে পৃথিবীপৃষ্ঠে ফিরিয়ে দিয়ে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে এই ঘটনাকে গ্রীন হাউস প্রভাব বলে ।

11. অ্যাসিড বৃষ্টি বলতে কী বোঝো

উত্তর : বাতাসে অবস্থিত SO2 ও NO2 বৃষ্টির জলে বা শিশিরের সঙ্গে মিশে H2SO4 বা HNO3 তৈরি করে মাটিতে পড়ে। একে এসিড বৃষ্টি বলা হয় ।

12. অ্যাসিড বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব কী? 

উত্তর: [1] মাটি ও জলাশয়ের অম্লীকরণ ঘটে। [2] স্টোন লেপ্রসি বা মার্বেল পাথরের (CaCO3) তৈরি ইমারত বা মূর্তির ক্ষতি হয়। 

CaCO3 + H2SO4 CaSO4 + CO2 + H2O

13. কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্যে কী কী পদার্থ থাকে? 

উত্তর: কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্যে DDT, BHC, নাইট্রেট ও সালফেট সার, আগাছানাশক প্রভৃতি থাকে, যা জলের সাথে মিশে বেরিয়ে যায়।

14. ইউট্রোফিকেশন কাকে বলে ?

উত্তর: অতিরিক্ত ফসফেট-জাতীয় সার এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহারে জলাশয়ের পুষ্টিগত বৃদ্ধির জন্য ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন বা জলজ শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে জলে অক্সিজেনের ঘাটতি (BOD বা Biological Oxygen Demand বৃদ্ধি) দেখা দেয়, একে ইউট্রোফিকেশন বলে।

15. অ্যালগাল ব্লুম বা শৈবাল ব্লুম কাকে বলে ?

উত্তর: জলাশয়ে ডিটারজেন্ট, ফসফেট-জাতীয় সারের উপস্থিতিতে জলাশয়ের পুষ্টিগত বৃদ্ধির জন্য শৈবালের অতিবৃদ্ধিকে অ্যালগাল ব্লুম বলে। শৈবালের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জলে জৈব অক্সিজেনের চাহিদা বা Biological Oxygen Demand (BOD) বৃদ্ধি পায় ও শৈবাল থেকে নিউরোটক্সিন ক্ষরিত হয়ে জলে মিশ্রিত হয়।

16. জলাভূমিকে প্রাকৃতিক বৃদ্ধ বলে কেন? 

উত্তর: মেরুদণ্ডী প্রাণীদের প্রধান রেচন-অঙ্গ হল বুক। দূষিত ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিপদার্থ সমৃদ্ধ রক্ত দেহে প্রবেশ করলে বৃক্ক প্রয়োজনীয় পুষ্টি পদার্থকে পরিসুত করে দূষিত পদার্থকে দেহ থেকে নির্গত করে। অনুরূপভাবে, বৃষ্টির জলের প্রবাহমান ধারার সাথে মাটির পরিপোষকও বাহিত হয়ে জলাভূমিতে আসে ও জমতে থাকে। জলজ উদ্ভিদ জলাভূমির মাটি থেকে ওই পরিপোষক শোষণ করে এবং পরিপোষকবিহীন জল জলাশয়ে থেকে যায়। এই কারণে জলাভূমিকে প্রাকৃতিক বৃক্ক বলে।

17. ইন-সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে ?

উত্তর: প্রাকৃতিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণকে ইন-সিটু সংরক্ষণ বলে, যেখানে বংশ বিস্তারের সকল সুযোগ-সুবিধা বর্তমান। 

উদাহরণ—সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানে বাঘের সংরক্ষণ এবং জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে একশৃঙ্গ গন্ডারের সংরক্ষণ।

18. এক্স-সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে ?

উত্তর: প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে বিশেষ সুরক্ষা প্রদানের জন্য কৃত্রিম পরিবেশে জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ করা হলে, তাকে এক্স-সিটু সংরক্ষণ বলে। 

উদাহরণ—চিড়িয়াখানায় বাঘ বা গন্ডারের সংরক্ষণ।

19. ক্রায়ো-সংরক্ষণ কাকে বলে ?

উত্তর: কলা, কোশ বা দেহের অংশকে – 196°C তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনে সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে ক্রায়োপ্রিসারভেশন বা ক্রায়ো-সংরক্ষণ বলে। যেমন—উদ্ভিদের বীজ, মুকুল, ভ্ৰূণ, পরাগরেণু ইত্যাদি এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়। একে জার্মপ্লাজম সংরক্ষণও বলে। শিবপুরের BSI তে এই সংরক্ষণ করা হয়।

20. বায়ুদূষণ কাকে বলে ?

উত্তর: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে বায়ুতে গ্যাসীয় উপাদানের ঘনত্ব বৃদ্ধি বা অবাঞ্ছিত বস্তুর মিশ্রণে জীবের পক্ষে যে ক্ষতিকারক অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে বায়ুদূষণ বলে। 

21. জলদূষণ কাকে বলে ?

উত্তর: প্রাকৃতিক বা মানুষের ক্রিয়াকলাপের জন্য জলে জীবাণু বা অবাঞ্ছিত বস্তুর উপস্থিতিতে জলের ভৌত, রাসায়নিক বা জৈবিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হয়ে মানুষ ও জলজ পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করাকে জলদূষণ বলে।

22. শব্দদূষণ কাকে বলে?

উত্তর: শব্দের প্রাবল্য 60 db-এর বেশি হলে তা তোতা সীমা অতিক্রম করে যার ফলস্বরূপ মানুষের মানসিক ও দৈহিক ক্ষতি সাধন হয় এবং প্রাণীরা আচরণ ও জীবন ধারণের উপর প্রভাব বিস্তার করে তার শব্দ দূষণ বলে ।


পরিবেশ তা সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ অধ্যায় |রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় | বড় প্রশ্ন উত্তর | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় সাজেশন 2022


প্রশ্ন : বায়ুদূষণের কারণ ও ফলাফলগুলি লেখো

উত্তর : বায়ুদূষণের কারণ ও ফলাফল বায়ুদূষণের কারণ ও ফলাফলগুলি নীচে উল্লেখ করা হল।

                বায়ুদূষণের কারণ:

বায়ুদূষণের কারণগুলি হল—

[1] গ্রিনহাউস গ্যাস: CO2, N2O, CH4, CFC প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। এগুলি জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, কলকারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন হয়। জলাভূমি ও গবাদিপশুর মল, মূত্র, সার কারখানা থেকে মিথেন উৎপন্ন হয়। আবার জেট ইঞ্জিন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, অ্যারোসল স্প্রে ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন CFC-ও বায়ুদূষণের কারণ। [2] SPM বা Suspended Particulate Matter: ধূলিকণা, কয়লার গুঁড়ো, মিস্ট, ধোঁয়া, পরাগরেণু প্রভৃতি ভাসমান কণিকা, যা বায়ুদূষণ ঘটায়, তাদের SPM বলে। এদের ব্যাস 1 অপেক্ষা কম হলে তাদের অ্যারোসল বলা হয়।

বায়ুদূষণের ফলাফল: 

[1] পরিবেশদূষণের ফলে সৃষ্ট সালফার ডাইঅক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO2) প্রভৃতি গ্যাস বৃষ্টির জল অথবা তুষার ও শিশিরে মিশে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4), নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO2), হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCI) প্রভৃতি তৈরি করে ও জলাশয়ের অম্লীকরণ ঘটায়। ফলে, জলাশয়ে উদ্ভিদের মৃত্যু ঘটে এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এই বৃষ্টি স্টোন লেপ্রসি সৃষ্টি করে বা স্মৃতি সৌধের ক্ষতি করে। [2] গ্রিনহাউস গ্যাস গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও ওজোনস্তরের জয়ের কারণ। [3] SO2 ও NO2 ফুসফুসের রোগ, যেমন অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস প্রভৃতি ঘটায়। যানবাহনের ধোঁয়াতে বেঙ্গোপাইরিন নামক যৌগ থাকে, যা ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য দায়ী। [4] SPM মানুষের শ্বাসনালীতে বা ফুসফুসে প্রবেশ করে হাঁপানি, ক্যানসার, যক্ষ্মা ও ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে।


প্রশ্ন : জলদূষণের কারণ ও ফলাফল লেখো।

জলদূষণের কারণ ও ফলাফল

জনদূষণের কারণ: জলদূষণের কারণগুলি হল—

[1] কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য পদার্থ: অতিরিক্ত সালফেট, ফসফেট সার, কীটনাশক, আগাছানাশক, ছত্রাকনাশক, পতঙ্গনাশক ইত্যাদি ফসলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এগুলির অতিরিক্ত প্রয়োগে এইসব রাসায়নিক বৃষ্টির জলের সাথে ধুয়ে জলাশয়ে মেশে ও জলদূষণ ঘটায়।

[2] জীবাণু: মল, মূত্র, হাসপাতালের বর্জ্য, গৃহস্থালি, হোটেল, রেস্তোরায় ব্যবহৃত নোংরা জল শৌচাগারের নর্দমা বাহিত জল ইত্যাদির সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া প্রভৃতি জীবাণু মিশ্রিত হয়ে জলাশয়ের জলকে দুষিত করে। জলাশয়ের জলের যথেচ্ছ ব্যবহার, বাসনপত্র ধোয়া, কাপড় কাচা, স্নান ইত্যাদির ফলে জলে নানাপ্রকার রোগজীবাণু জন্মায়, যা জলকে দূষিত করে। 

[3] ভৌমজলের অতিব্যবহার: মাটির জলস্তর স্বাভাবিক থেকে অনেক নীচে নেমে গেলে জ্বলে এই সকল ভারী ধাতু (যেমন—আর্সেনিক, ফ্লরাইড)-র ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে জল দুষিত হয়।

জলদূষণের ফলাফল: জলদূষণের ফলাফলগুলি নিম্নরূপ।

[1] ইউট্রোফিকেশন: জলদূষণের কারণে সালফেট ও ফসফেট সার জলাশয়ে মিশে গিয়ে জলাশয়ে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান সঞ্চয়ের ফলে জলাশয়ে শৈবালের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। জলাশয়ে শৈবালের দ্রুত প্রজনন ও বৃদ্ধির এই ঘটনাকে অ্যালগাল ব্লুম বলে। অতিরিক্ত শৈবালের মৃত্যুর পরে জীবাণু দ্বারা বিয়োজন মাত্রা বেড়ে যায় বলে জলাশয়ের সমস্ত অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়। ফলে অক্সিজেনের অভাবে জলজ প্রাণীর মৃত্যু হয়। জলদূষণজনিত কারণে সংঘটিত এই সমস্ত ঘটনাকে ইউট্রোফিকেশন বলে।

[2] রোপ: দুষিত জল পান করলে মানুষের কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস-A, E, আমাশয়, আন্ত্রিক, অ্যাসকেরিয়াসিস প্রভৃতি রোগ হয়। জলে আর্সেনিক দূষণের প্রভাবে ব্ল্যাকফুট, আবার ফ্লওরিনের প্রভাবে ফ্লুরোসিস রোগ হয়।

প্রশ্ন : শব্দদূষণের কারণ ও ফলাফল লেখো।

উত্তর : শব্দদূষণের কারণ ও ফলাফল শব্দদূষণের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল।

শব্দদূষণের কারণ : 

যানবাহনের হর্ন, ট্রেন, এরোপ্লেন, রেডিও, টিভি, লাউডস্পিকার ইত্যাদির শব্দ, কলকারখানার সাইরেন প্রভৃতি থেকে উৎপন্ন উচ্চ প্রাবল্যের শব্দই শব্দদূষণের কারণ। 

শব্দদূষণের ফলাফল: 

[1] দীর্ঘকাল ধরে উচ্চ প্রাবল্যের শব্দের মধ্যে থাকলে কটি যন্ত্রের ক্ষতি হয় ও বধিরতা সৃষ্টি হতে পারে। 160 db-এর বেশি শব্দে কানের পর্দা ছিঁড়ে সম্পূর্ণ বধিরতা হয়। [2] দীর্ঘস্থায়ী শব্দদূষণ  হৃদ্ গতি পরিবর্তন করে। 90 db-এর বেশি শব্দ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে ও মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন এর সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

[3] শব্দদূষণ মানসিক অবসাদ, ঘুম না হওয়া, স্নায়ু উত্তেজনা সৃষ্টি করে। 

[4] শব্দদূষণের ফলে পশুপাখির আচরণে হিংস্রতা বৃদ্ধি পায় এবং প্রজননে বাধা সৃষ্টি হয়।


প্রশ্ন : ক্যানসারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি সংক্ষেপে লেখো।

ক্যানসারের কারণ, লক্ষ ও চিকিৎসা ক্যানসারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।। 

কারণ: ক্যানসারের কারণগুলি হল — 

[1] কীটনাশক, আগাছানাশক প্রভৃতির অতিরিক্ত প্রয়োগ ক্যানসারের কারণ। 

[2] ধূমপান ও তামাক চর্বন ক্যানসারের অপর একটি কারণ। সিগারেটের ধোঁয়াতে এবং তামাক, গুটকাতে উপস্থিত বেঝোপাইরিন, নিকোটিন, টার, CO ইত্যাদি ফুসফুস ও মুখের ক্যানসারের জন্য দায়ী। 

[3] অ্যাসবেস্টস, ক্রোমিয়াম, প্লাস্টিক কণা প্রভৃতি ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য দায়ী। 

[4] অতিবেগুনি রশ্মি, তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ইত্যাদি থেকে ত্বকের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ক্যান্সারের লক্ষণ: 

[1] WBC-এর হঠাৎ সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে, জ্বর হয়। 

[2] প্রচণ্ড দুর্বলতা ও দৈহিক ওজন হ্রাসপ্রাপ্তি ঘটে।

[3] দেহের বিভিন্ন স্থানে টিউমার হয়।

ক্যান্সারের চিকিৎসা: 

বায়োপসি-র সাহায্যে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। শল্যচিকিৎসা, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি প্রভৃতি চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত।


প্রশ্ন :  কমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি কী কী সমস্যার সৃষ্টি করছে তা সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে সৃষ্ট সমস্যা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সৃষ্ট সমস্যাগুলি হল—

[1] প্রাকৃতিক সম্পদের অতিব্যবহার: জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি করে। ফলে বনজসম্পদ, জলসম্পদ, কৃষিক্ষেত্র ক্রমশ হ্রাস পায়। প্রাকৃতিক সম্পদের অতিব্যবহারে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়।

[2] অরণ্য ধ্বংস: ক্রমবর্ধমান জনসংখার চাহিদা মেটাতে খাদ্য সমস্যা মেটানোর জন্য প্রয়োজন কৃষিজমির বিস্তার যা অরণ্য ধ্বংসের একটি অন্যতম কারণ। এ ছাড়াও রাস্তাঘাট নির্মাণ, রেলপথ নির্মাণ, নগরায়ণ, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য যেমন বনাঞ্চল হ্রাস পাচ্ছে তেমনি CO2 এর পরিমাণ বাড়ছে ও বন্যপ্রাণী বিপন্ন হচ্ছে।

[3] বায়ু ও জলদূষণ: জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অত্যধিক যানবাহনের ব্যবহার, জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, কলকারখানার ধোঁয়া, কৃষিক্ষেত্রে যথেচ্ছ রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আগাছানাশকের ব্যবহার বায়ু ও জলের দূষণ ঘটাচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন রোগ, ক্যানসারের সৃষ্টি হচ্ছে।

[4] বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ও বিশ্ব উন্নায়ন: জনসংখ্যা বৃদ্ধির দরুন শিল্প, কৃষি ও মানব উন্নয়নের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপে গ্রিনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধি বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন ও বিশ্ব উন্নায়নের কারণ। গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি অতিরিক্ত তাপ শোষণ করে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে চলেছে। 

[5] খাদ্য সংকট: অত্যধিক জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা পুরণের জন্য কৃষিজমি বৃদ্ধি না পেয়ে ক্রমশ হ্রাস পাওয়ায় খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা এর দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত হচ্ছে

Tags

Post a Comment

1 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Thank you for comment 🤗